
কাপ্তাই রাঙ্গামাটি প্রতিনিধিঃ
মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব
ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে রাঙ্গামাটি কাপ্তাইয়ে পালিত হলো মারমা সম্প্রদায়ের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই বা জলকেলি উৎসব। পুরনো বছরের সব দুঃখ, কষ্ট,গ্লানি ও জরাজীর্ণ ধুয়ে-মুছে ফেলতে প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও সাংগ্রাই উৎসব পালিত হয়।
মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল সকাল ১১ টা হতে মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব উদ্বোধনের মাধ্যমে শুরু হয়। চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার এলাকায় এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংগ্রাই উৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক উথোয়াইমং মারমা। প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কাজল তালুকদার এই সময় সাংগ্রাই উৎসব আয়োজক কমিটি ও কাপ্তাই রাঙ্গামাটি সহ দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানান। এই সময় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মামুনুর রশিদ (মামুন),জেলা পরিষদ সদস্য ক্যওসিংমং,কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সভাপতি লোকমান আহমেদ। সিনিয়র সহ-সভাপতি জাফর আহমেদ স্বপন, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মামুন,সাংগ্রাই জলোৎসব উদযাপন কমিটির আহবায়ক উথোয়াইমং প্রমুখ।
মারমাদের ঐতিহ্যবাহী সাংগ্রাই উৎসব
প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি ফিতা কেটে সাংগ্রাইয়ের মূল আকর্ষণ পানি খেলা বা জলকেলি উৎসবের উদ্বোধন করেন। এরপর শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী পানি খেলা। এতে মূলত অবিবাহিত তরুণ-তরুণীরা একে অপরকে পানি ছিটিয়ে ভিজিয়ে দেয়। এর মধ্যদিয়ে বিগত বছরের সকল পাপ ও জরাজীর্ণ ধুয়ে-মুছে যায় বলে তাদের বিশ্বাস। একদিকে তরুণী অপর দিকে তরুণরা মুখোমুখি হয়ে দাঁড়ায়। ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় পানি ভর্তি করে রাখা হয়। এরপর বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে চলে পরস্পকে পানি ছিটানো। এভাবে এক দলের খেলা শেষে আরেক দল খেলা শুরু হয়। জলকেলি উৎসবের মাধ্যমে মারমা তরুণ-তরুণীদের একে-অন্যের সাহায্যের আসার সুযোগ হয়। এসময় তারা তাদের প্রিয় মানুষটিকে বেছে নেওয়ার কাজটিও সফলভাবে সেরে নেন। সাংগ্রাই উৎসবের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পানি খেলা দেখার জন্য হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর উৎসবস্থলে সমবেত হন।
সাংগ্রাই মূলত মারমাদের উৎসব হলেও এর সঙ্গে পার্বত্য জেলার বিভিন্ন জনগোষ্ঠী এমনকি বাঙালিরাও এতে যোগ দেয়। ফলে মারমা সম্প্রাদায় র মধ্যেই উৎসাহ বাড়ে। সাংগ্রাই উৎসব পরিণত হয় পাহাড়ি-বাঙালির মিলনমেলায় কাপ্তাই
চিৎমরম বৌদ্ধ বিহার মাঠে।