রাঙামাটিতে দলীয় মনোনয়ন ঘিরে উৎসুক বিএনপি; ধানের শীষ প্রতীকেই কাজ করার প্রত্যয়

 

মাহাদী বিন সুলতানঃ

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ইতোমধ্যেই দলীয় মনোনয়ন নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন, নানা আলোচনা। রাঙামাটিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র নেতাকর্মীরা তাদের পছন্দের নেতাকে বেছে নিতে চান দলীয় মনোনয়নের মাধ্যমে। এনিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব নেটিজেনরা। কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন প্রার্থী ঘোষণা না করায় এই এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীদের কৌতূহল আরও বেড়েছে। সম্প্রতি রাঙামাটিতে নেটিজেনদের মধ্যে দলীয় মনোনয়নের আভাস পাওয়া যাচ্ছে এমন মন্তব্য উঠে আসছে। তবে বিএনপি নেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাকেই মনোনয়ন দিবেন তাকে নিয়েই কাজ করতে চান তারা। দলের নেতারা যাচাই বাছাই করেই রাঙামাটিবাসীর আস্থা, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দিবেন এমনটাই প্রত্যাশা দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের। দলীয় সূত্রে জানা যায়, ইতোমধ্যে রাঙামাটির ২৯৯নং আসনের কয়েকজন নেতা মনোনয়ন প্রত্যাশী রয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতা, সাবেক জনপ্রতিনিধি এবং কয়েকজন সক্রিয় সংগঠক। তবে তাদের মধ্য থেকে এখন পর্যন্ত কাউকেই আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়নের ঘোষণা দেয়নি কেন্দ্রীয় বিএনপি। এবিষয়ে সাবেক পৌর মেয়র ও রাঙামাটি জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম ভূট্টো জানান, শিক্ষিত, নির্লোভ, বিতর্কহীন এবং সমাজের সকল স্তরের জনগণের আস্থাশীল নেতাকেই এমপি হিসেবে দেখতে চাই, জেলা বিএনপির সহ সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম পনির জানান, আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আমরা দীর্ঘদিন একটা নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের লক্ষ্যে আন্দোলন করেছি। আগামীতে অন্তবর্তীকালীন সরকারের মাধ্যমে একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এমনটাই আশা করছি। আগামী নির্বাচন ঘিরে দলের নেতাকর্মীরা উৎফুল্ল। দলের পক্ষ থেকে যাচাই বাছাই শেষে যাকেই মনোনয়ন দিবে তাকে নিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার মধ্য দিয়ে ২৯৯নং আসনটি বিএনপিকে উপহার দিতে চাই। রাঙামাটি জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম শাকিল বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা রয়েছে যেহেতু বৃহৎ এই দলের অনেকেই মনোনয়ন প্রত্যাশী। এর মধ্যে একজন কে মনোনীত করতে হবে। সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিকেই মনোনয়ন দেওয়া হবে। তারেক রহমানের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরাও একমত। মনোনয়ন প্রত্যাশী কয়েকজন কে ইতোমধ্যে ঢাকায় ডাকা হয়েছে। এর মধ্য থেকে দল যাকেই যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দিবে আমরা তাকে নিয়েই নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব। বিষয়টি নিয়ে নানিয়ারচর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ নুরুজ্জামান জানান, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরী। তিনি তার প্রজ্ঞা ও মেধা দিয়ে দলকে সুসংগঠিত রেখেছেন। তার যোগ্য নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধভাবে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে কাজ করবে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যাকেই মনোনয়ন দিবেন তাকে নির্বাচিত করার মধ্য দিয়ে রাঙামাটি বিএনপির পক্ষ থেকে ২৯৯নং আসনটি দলকে উপহার দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে বলেও জানান এই বিএনপি নেতা। জানতে চাইলে কাউখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাঙামাটিতে মনোনয়ন প্রত্যাশী যারাই আছেন সকলেই বিএনপির সম্পদ। সকলেই দলের দুর্দিনে আন্দোলন সংগ্রাম করেছেন। তবে দল যাকেই মনোনয়ন দিবেন আমরা সকলেই তার হয়ে কাজ করব। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তৃণমূল বিএনপির অনেক নেতা জানান, বিগত বছর গুলোতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামিলীগের হামলা মামলার স্বীকার হয়েছেন, দলের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেছেন এবং তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের খোঁজ রেখেছেন এমন যোগ্য ব্যক্তিকেই এমপি হিসেবে চান তারা।  বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এমন কাউকে মনোনয়ন দিয়ে দলের নেতাকর্মীদের দূঃখ কষ্টের সারথি করবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন তারা।উল্লেখ্য, সব মিলিয়ে বিএনপির মনোনয়নপ্রাপ্ত ব্যক্তি ৬১১৬.১৩ বর্গ কিলোমিটারের এই আসনে স্থানীয়দের আস্থার প্রতীক হয়ে এলাকার উন্নয়নে অনেক বড় ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদগণ। ৫লক্ষাধিক ভোটারের বিশাল এই আসনে পাহাড়ি-বাঙালি ঐক্য, সাংগঠনিক শক্তি ও গণসংযোগের দক্ষতাকে গুরুত্ব দিয়ে প্রার্থী নির্বাচন করলে ২৯৯নং আসন বিএনপির খাতায় থাকবে বলেও আশা করেন দলের প্রবীণ নেতারা।