আজ বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির আনন্দ সভাযাত্রা ও আলোচনা সভা

চৌধুরী মুহাম্মদ রিপনঃ

কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির উদ্ধেগে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী
উপলক্ষে আনন্দ সভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় ১৫আগষ্ট ২০২৪ আজ সকাল ১১ টায়।
দেশের জনপ্রিয় রাজনৈতিক নেত্রী, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৭৯তম জন্মবার্ষিকী আজ। তিনি আজ পা রাখলেন ৮০ বছরে। এবারের জন্মদিন এমন এক সময় উদযাপিত হচ্ছে যখন বিগত পতিত সরকারের রাজনৈতিক জিঘাংসায় পড়ে সাড়ে ছয় বছর ধরে অন্যায় বিচারে বিনাচিকিৎসায় গুরুতর অসুস্থ তিনি। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বন্দী জীবন থেকে নয় দিন আগে মুক্তি পেয়েছেন বেগম জিয়া। তাই তার এই জন্মদিনে দলের নেতা-কর্মী-সমর্থকরা আনন্দে আপ্লুত।
জাতীয়তাবাদী শক্তির অবিসংবাদিত এই নেত্রী ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট দিনাজপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা চন্দনবাড়ির মেয়ে তৈয়বা মজুমদার আর পিতা ফেনীর ফুলগাজির ইস্কান্দার মজুমদার। দিনাজপুরে সুরেন্দ্রনাথ কলেজে পড়ার সময় তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন জিয়াউর রহমানের সঙ্গে পরিণয়সূত্রে আবদ্ধ হন। জিয়া-খালেদা দম্পতির দুই সন্তান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পিনু আর মরহুম আরাফাত রহমান কোকো। ১৯৮১ সালের ৩১ মে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে শাহাদাত বরণ করেন। ততদিন অবধি সাধারণ আটপৌরে গৃহবধূই ছিলেন খালেদা জিয়। শেষাবধি দলের নেতা-কর্মীদের দাবির টানে ঘরের চৌহদ্দি ডিঙ্গিয়ে নামতে হয় রাজপথে। ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি দলের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন খালেদা জিয়া। ১৯৮৪ সালের ১০ মে খালেদা জিয়া বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি চেয়ারপারসন নির্বাচিত হন। ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় তিনি আপসহীন নেত্রী হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠেন। স্বৈরাচারের পতনের পর নির্বাচনে জনগণ বেছে নেন তাকেই। রাজপথ হয়ে বাংলাদেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীর গৌরবে অভিষিক্ত হন বেগম জিয়া। তিনবার সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনি।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় মাত্র ২ কোটি টাকার সাজানো মামলার ফরমায়েশী রায়ে কারারুদ্ধ করে শেখ হাসিনার সরকার। পুরানো কারাগারে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বিনা চিকিৎসায় বন্দী রাখার ফলে বেগম জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। ২০২০ সালে করোনাকালে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে গুলশানে ভাড়া বাসায় এনে বন্দী রাখা হয় খালেদা জিয়াকে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা তাকে বিদেশে নিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুপারিশ করলেও বার বার পরিবারের পক্ষ থেকে করা আবেদন শেখ হাসিনার সরকার নাকচ করে দেয়। বেগম খালেদা জিয়া হৃদযন্ত্র, লিভারের সমস্যা, ডায়াবেটিস, চোখ ও হাঁটুর সমস্যাসহ নানা রোগে আক্রান্ত। এরই মধ্যে করোনা, হার্ট ও লিভারের সমস্যায় বার বার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে। কিছুদিন আগে তার একটি অপারেশন হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়ার বন্দীত্বকালের সাড়ে ছয় বছরে তার বড় পুত্র তারেক রহমান লন্ডনে থেকেই দলকে তৃণমূল শক্তিতে রূপান্তরিত করেছেন। আজ তার মা বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিনে তিনি পরবাসে। তবে বিএনপির প্রতিটি নেতা-কর্মী-সমর্থক স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে আজ নির্ভয়ে পরমানন্দে তার জন্মদিন পালন করেন। সারাদেশের মত কাপ্তাই উপজেলা বিএনপি উপজেলা চত্বর, বড়ইছড়ি বাজার, কাপ্তাই সড়ক আনন্দ সভাযাত্রা ও আলোচনা সভা করেন। এই সময় রাঙ্গামাটি জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ দিলদার হোসেন প্রধান অতিথি হিসাবে, উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মামুনের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন, কাপ্তাই উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সভাপতি জাফর আহমেদ স্বপন, চ্ন্দ্রঘোনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জাকির হোসেন, ওয়াগ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহীম হাবিব মিলু, ওয়াগ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক মায়া রাম তনচংগ্যা, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের কাপ্তাই উপজেলা শাখার সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী ছাত্র দল কাপ্তাই উপজেলা শাখার আহবায়ক সেকান্দর আলি রাসেল, কর্ণফুলী কলেজ ছাত্র দলের সদস্য সচিব আকাশ প্রমুখ। প্রধান অতিথি র বক্তব্যে বলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া র শুভজম্মদিন উপলক্ষে কাপ্তাইবাসী সহ দেশবাসী কে শুভেচ্ছা জানান। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। তিনি উপস্থিত সকলকে বলেন, সংখ্যালঘু হিন্দু ভাইদের মন্দির সহ বাড়ী ঘরে কোন রকম দুষ্কৃতিকারীদের হামলা শিকার না হয় সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।