পোর্টেবল সোলার আইপিএসঃ তিন পার্বত্য জেলায় বিদ্যুৎ সংকটের টেকসই সমাধান

 

বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা — রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর হলেও এখানকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। দুর্গম পাহাড়ি ভূপ্রকৃতি ও প্রান্তিক অবস্থানের কারণে জাতীয় গ্রিডের বিদ্যুৎ অনেক গ্রামে পৌঁছানো এখনও দুঃসাধ্য। এ অবস্থায় “পোর্টেবল সোলার আইপিএস” হতে পারে এক কার্যকর ও টেকসই সমাধান।
বিদ্যুতের সংকট
এই তিন পার্বত্য জেলার বহু এলাকায় দিনে কয়েক ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। কোথাও কোথাও মাসের পর মাস বিদ্যুৎহীন অবস্থা বিরাজ করে। সন্ধ্যার পর অন্ধকারে ডুবে যায় গ্রামগুলো, ব্যাহত হয় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা, ক্ষতিগ্রস্ত হয় স্থানীয় ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা, এমনকি মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগও বাধাগ্রস্ত হয়।
সমাধান হতে পারে পোর্টেবল সোলার আইপিএস
পোর্টেবল সোলার আইপিএস দিনে সূর্যালোক থেকে ব্যাটারি চার্জ করে একই সাথে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।
ট্র্যাডিশনাল সোলার সিস্টেম সাধারণত লিড এসিড ব্যাটারি ব্যবহার করে, যা দ্রুত নষ্ট হয় এবং বারবার ঝামেলা তৈরি করে।
আধুনিক পোর্টেবল সোলার আইপিএস-এ ব্যবহৃত হয় লিথিয়াম ফসফেট ব্যাটারি, যা ১৫ থেকে ২০ বছর স্থায়ী হয়।
৭৫০ থেকে ১০০০ ওয়াট ক্ষমতার একটি পোর্টেবল সোলার আইপিএস দিয়েই পার্বত্য অঞ্চলের একটি পরিবারের ন্যূনতম চাহিদা মেটানো সম্ভব।
প্রযুক্তির বিশেষ সুবিধা
✅ গ্রিডবিহীন বিদ্যুৎ সুবিধা — জাতীয় গ্রিড ছাড়াই সহজে যেকোনো গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছানো যায়।
✅ পরিবেশবান্ধব — কোনো কার্বন নির্গমন নেই, রক্ষণাবেক্ষণ খরচও খুব কম।
✅ আয়ের সুযোগ — অতিরিক্ত বিদ্যুৎ স্থানীয়ভাবে বিক্রি করে আয় করা সম্ভব।
নীতিনির্ধারকদের করণীয়
সরকার যদি স্থানীয় পর্যায়ে সাবসিডি ও সহজ কিস্তিতে পোর্টেবল সোলার আইপিএস সরবরাহের উদ্যোগ নেয়, তবে বিদ্যুৎ সংকট অনেকাংশেই দূর হবে। এর সাথে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড, তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ, এনজিও ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
উপসংহার
পার্বত্য এলাকার উন্নয়ন শুধু অবকাঠামো দিয়ে সম্ভব নয়; দরকার টেকসই বিদ্যুৎ সেবা। পোর্টেবল সোলার আইপিএস সেই সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে। এটি শুধু আলো নয়, নতুন সম্ভাবনা জ্বালাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও অর্থনীতির প্রতিটি স্তরে।

লেখকঃ
✍️ এম. এ হোসাইন