কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়েছে, ঝুকিতে ঝুলন্ত সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাঙামাটিঃ

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে এসেছে ইতিবাচক পরিবর্তন, তবে রাঙামাটির অন্যতম আকর্ষণ ‘ঝুলন্ত সেতু’ এখন পানির চাপে ডুবে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। পর্যটন করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়ির চেঙ্গী ও মাইনী, রাঙামাটির কাচালং নদী এবং ভারতের মিজোরাম রাজ্য থেকে নেমে আসা কর্ণফুলী নদীর পানি কাপ্তাই হ্রদে এসে মিশেছে। এক সপ্তাহ ধরে টানা বৃষ্টিপাত এবং উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে হ্রদের পানির পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হ্রদের পানি বর্তমানে রাঙামাটির ঝুলন্ত সেতুর পাঠাতন পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। এ বিষয়ে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, “যেভাবে পানি বাড়ছে, তাতে সেতুটি যেকোনো সময় ডুবে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য সেতু পারাপার সাময়িক বন্ধ ঘোষণা করা হবে।” বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বস্তি কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র সূত্র জানায়, মঙ্গলবার দুপুরে হ্রদের পানির উচ্চতা ছিল ১০৫.২৪ ফুট মিন সি লেভেল (MSL), যেখানে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতা ১০৮ ফুট। রুলকার্ভ অনুযায়ী, এই সময় হ্রদের পানির উচ্চতা থাকার কথা ৮৮.৩১ ফুট MSL। পানির এই বৃদ্ধি বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাপক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। মঙ্গলবার কেন্দ্রটি ২২২ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে, যেখানে আগের দিন ছিল ২১৯ মেগাওয়াট। কেন্দ্রের পাঁচটি ইউনিটই এখন সচল রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির সর্বোচ্চ উৎপাদন সক্ষমতা ২৪৫ মেগাওয়াট পর্যন্ত।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মাহমুদ হাসান জানান, “বর্তমানে হ্রদে পানির উচ্চতা ১০৫.২৪ ফুট। যদি এটি ১০৮ ফুট ছাড়িয়ে যায়, তবে নিরাপত্তার স্বার্থে ১৬টি জলকপাট খুলে দেওয়া হবে।” শেষ কথা-যদিও কাপ্তাই হ্রদে পানির বৃদ্ধি বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য আশীর্বাদস্বরূপ, তবে একইসাথে এটি পর্যটন অবকাঠামোর জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ পর্যটক ও সাধারণ জনগণকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে।