কাপ্তাই তম্বপাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারে জাদিতে বুদ্ধ ধাতু প্রতিস্থাপন ও ১৩তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠিত

চৌধুরী মুহাম্মদ রিপন, কাপ্তাইঃ

রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার ওয়াগ্গা ইউনিয়নের তম্বপাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, মৈত্রীর আবহ ও হাজারো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে জাদিতে বুদ্ধ ধাতু প্রতিস্থাপন ও ১৩তম শুভ কঠিন চীবর দানোৎসব-২০২৫।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দিনব্যাপী এ দানোৎসবের আয়োজন করে বিহার পরিচালনা কমিটি ও দায়ক–দায়িকা বৃন্দ। সকালে বুদ্ধ পতাকা উত্তোলন ও পঞ্চশীল গ্রহণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এরপর বুদ্ধ পূজা, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘদান, অষ্টপরিস্কার দান, পিণ্ডদানসহ নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় পর্বে বেলা আড়াইটা নাগাদ কল্পতরু ও কঠিন চীবর শোভাযাত্রা মঞ্চে আনা হয়। উদ্বোধনী ধর্মীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সকল প্রাণীর হিতসুখ ও বিশ্বশান্তি কামনায় কল্পতরু দান ও কঠিন চীবর দান সম্পন্ন করা হয়। উক্ত মহতী পুণ্যানুষ্ঠানে প্রধান আশীর্বাদক হিসেবে আসন অলংকৃত করেন রাজনিকায় মার্গে ৬ষ্ঠ মহাসংঘনায়ক ও চিংস্রং বৌদ্ধ বিহার বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত পামোক্ষা মহাথেরো।
প্রধান সদ্ধর্ম দেশক ছিলেন ব্যাঙছড়ি জয়মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত সনা মহাথেরো।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মগোদা মঙ্গলসুখ বৌদ্ধ বিহার বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত জ্ঞানবংশ মহাথেরো।
বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি পাইসুইউ মারমা স্বাগত বক্তব্য রাখেন। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন তম্বপাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের উপদেষ্টা মংচাপ্রু মারমা (কারবারী), উপদেষ্টা সাবেক মেম্বার লাব্রে চাই মারমা, যুগ্ম সম্পাদক থোয়াইচিং মারমা প্রমুখ। হাজারো পুণ্যার্থীর অংশগ্রহণে তম্বপাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের এই শুভ দানোৎসব বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মধ্যে আনন্দ, ঐক্য ও মৈত্রীর এক অনন্য দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করেছে। তম্বপাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত সুগন্ধা মহাথেরো বলেন, কঠিন চীবর দান হলো বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের জন্য অন্যতম শ্রেষ্ঠ দান। এই দানের মাধ্যমে মানুষ দানশীলতা, ধৈর্য ও পরম মৈত্রীর চর্চা করে। আজকের এই জাদিতে বুদ্ধ ধাতু প্রতিস্থাপন ও কঠিন চীবর দানোৎসবের মাধ্যমে আমরা শুধু ধর্মীয় আচার পালন করছি না, বরং সমাজে শান্তি, সম্প্রীতি ও ঐক্যের বীজ বপন করছি। সকল প্রাণীর মঙ্গল ও বিশ্বশান্তি কামনা করছি। তম্বপাড়া ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের সভাপতি পাইসুইউ মারমা বলেন, এই মহতী পুণ্যানুষ্ঠান সফলভাবে সম্পন্ন করতে যেসব দায়ক–দায়িকা, ভিক্ষুসংঘ, বিহার কমিটি ও পুণ্যার্থীগণ নিরলস পরিশ্রম ও সহযোগিতা করেছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ভবিষ্যতেও এই ঐতিহ্য বজায় রেখে ধর্মীয় চেতনা ছড়িয়ে দিতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে।