কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি, খুলে দেওয়া হয়েছে বাঁধের ১৬টি গেট

 

রবিউল হোসেন চৌধুরী রিপনঃ
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কৃত্রিম জলাধার কাপ্তাই হ্রদের পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছানোয় সোমবার (৪ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টা ২ মিনিটে কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্পিলওয়ের ১৬টি গেট (জলকপাট) ৬ ইঞ্চি করে খুলে দেওয়া হয়েছে। ফলে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৯ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিঃসরণ হচ্ছে। টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের কারণে কাপ্তাই লেকের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে। গতকাল (৪ আগস্ট) কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা ১০৮.০৫ ফুটে পৌঁছে যায়। এই পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে গেট খোলার সিদ্ধান্ত নেয়। কাপ্তাই পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান জানান, গত ৩ আগস্ট (রবিবার) সন্ধ্যা ৬টায় কাপ্তাই লেকের পানির উচ্চতা ছিল ১০৭ ফুট, যা বিপদসীমার কাছাকাছি। সেই প্রেক্ষিতে ৪ আগস্ট (সোমবার) বিকেল ৩টায় পানি ছাড়া হতে পারে বলে প্রথম বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেদিন বৃষ্টি না থাকায় এবং ইনফ্লোর পরিমাণ কম থাকায় পরে পানি না ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনি বলেন, পরবর্তীতে হ্রদের পানির স্তর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সকাল ৯টায় পানি ছাড়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সকলকে অবহিত করা হয়, সোমবার দিনে বৃষ্টি হওয়ায় সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ২ মিনিটে ১৬টি গেট খুলে দেওয়া হয়। ব্যবস্থাপক মাহমুদ হাসান আরও জানান, ভাটি অঞ্চলের মানুষকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। এদিকে কাপ্তাই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ৫টি ইউনিট সচল রয়েছে। এসব ইউনিটের মাধ্যমে প্রতি সেকেন্ডে আরও ৩২ হাজার কিউসেক পানি কর্ণফুলী নদীতে নিঃসৃত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রটির কন্ট্রোল রুমে দায়িত্বরত প্রকৌশলীরা। এমতাবস্থায় কর্ণফুলী নদীর ভাটি অঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে, যেন তারা নিরাপদ স্থানে সরে যান এবং পানির উচ্চতা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেন।