না ফেরার দেশে চলে গেলেন সংগীতশিল্পী ফরিদা পারভীন

 

মোঃআবদুল হক বিশেষ প্রতিনিধিঃ

পৃথিবীর সকল কিছু ত্যাগ করে লোকসংগীতের বরেণ্য শিল্পী ফরিদা পারভীন। গত শনিবার রাত ১০টা ১৫ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা য়ায়। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।রেখে য়ান স্বামী ও চার সন্তান । অনেক দিন ধরে নেফ্রাইটিস কিডনি রোগে ভুগছিলেন। সপ্তাহে দুই দিন তাঁকে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। ২ সেপ্টেম্বর মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা জন্য নেওয়া হয়। পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে। তখন চিকিৎসক তাঁকে হাসপাতালে ভর্তির পরামর্শ দেন। তিনি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত বুধবার অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে তিনি চলে যান না-ফেরার দেশে। ফরিদা পারভীন ১৯৫৪ সালে ৩১ ডিসেম্বর নাটোরের সিংড়া থানায় জন্ম নেন। গানের মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন ৫৫ বছর। ১৪ বছর বয়সে ১৯৬৮ সালে পেশাদার সংগীতজীবন শুরু হয়। পারিবারিক সূত্রেই গানের ভুবনে আসা। গানের প্রতি বাবার টান ছিল বেশি। দাদিও গান করতেন। বাবার চাকরির সুবাদে বিভিন্ন জেলায় যেতে হয়েছে তাঁকে। শৈশবে মাগুরায় ওস্তাদ কমল চক্রবর্তীর কাছে সংগীতের হাতেখড়ি নেন। প্রতিকূলতার মধ্যেও গান থেকে দূরে থাকেননি। বিভিন্ন ধরনের গান করেছেন। জনপ্রিয়তা, অগণিত মানুষের ভালোবাসা লালন সাঁইয়ের গান গেয়েছেন। লালনের গান গাওয়া শুরু হয়েছিল, তারপর আর থেমে থাকেননি। সংগীতশিল্পী শুরুতে নজরুলসংগীত, পরে আধুনিক গান দিয়ে ফরিদা পারভীনের যাত্রা শুরু হলেও জীবনের বেশির ভাগ সময়ে লালন সাঁইয়ের গান গেয়েছেন। এবং লালনসংগীতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব মকছেদ আলী সাঁইয়ের কাছে তালিম নিয়েছেন তিনি। “সত্য বল সুপথে চল ওরে আমার মন”, লালনের বিখ্যাত গানটি শিখি। একই বছর দোলপূর্ণিমা উৎসবে গানটি গেয়েছিলে। এ গানই আমার নতুন পথের দিশা হয়েছিল। এরপর ধীরে ধীরে বুঝতে শিখি, কী আছে লালনের গানে। তাঁর গানে মিশে থাকা আধ্যাত্মিক কথা ও দর্শন আমাকে ভাবিয়ে তোলে। এ পর্যায়ে অনুভব করি, লালন তাঁর সৃষ্টির মধ্য দিয়ে অনবদ্য এক স্রষ্টা হয়ে উঠেছেন। এটা বোঝার পর লালনের গান ছাড়া অন্য কিছু ভাবতেই পারে নাই তিনি।