মোঃ মোকাদ্দেছুর রহমান রকি, যশোর থেকেঃ
বিদেশীদের মতো অতি ফর্সা চামড়ার রঙ নিয়ে জন্মানো ছোট্ট আফিয়া জন্মের মুহূর্ত থেকেই হারায় পিতৃপরিচয়। সমাজের অবহেলা, নিষ্ঠুর কটূ মন্তব্য আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অন্ধকারে ডুবে ছিল সে এবং তার মা মনিরা খাতুন। কিন্তু সেই অন্ধকারেই মানবিকতার আলো হয়ে পাশে দাঁড়ালেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। মা–মেয়ের জন্য নতুন ঘর নির্মাণ থেকে শুরু করে আফিয়ার সম্পূর্ণ শিক্ষাজীবনের দায়িত্ব নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তিনি জাগিয়ে তুলেছেন নতুন আশা। শুক্রবার সকালে যশোর সদর উপজেলার রামনগর বাজুয়াডাঙ্গা গ্রামে আফিয়া ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও যশোর–৩ আসনের প্রার্থী অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হৃদয়বিদারক ঘটনার পরপরই তারেক রহমানের নির্দেশে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং পুরো পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে ‘বিদেশীদের মতো গায়ের রঙ হওয়ায় সন্তানকে অস্বীকার; মানবেতর জীবন আফিয়া ও তার মায়ের’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হলে ঘটনাটি দেশব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। ২০২০ সালে মনিরা খাতুনের সঙ্গে বিয়ে হয় মোজাফফর হোসেনের। ২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর জন্ম নেয় তাদের মেয়ে আফিয়া। কিন্তু শিশুটির অতি ফর্সা রঙ দেখে জন্মের পর একবারও কোলে নেননি মোজাফফর। সন্তানকে অস্বীকার করে তিনি স্ত্রীকে ফেলে রেখে অন্যত্র চলে যান এবং আট মাস পর তালাক দিয়ে বিদেশে পাড়ি জমান। সন্তানের ভবিষ্যত্ নিয়ে একাকী লড়াইয়ে মনিরা আশ্রয় নেন সৎমায়ের বাড়িতে—যেখানে দিন কাটছিল চরম অনটন আর সামাজিক অপমান সহ্য করে।গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হওয়ার পর বিষয়টি নজরে আসে তারেক রহমানের। তাঁর নির্দেশে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত দ্রুত পরিবারটির খোঁজ নেন, প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান—আগামী দশ দিনের মধ্যেই আফিয়া ও তার মায়ের জন্য নতুন ঘর তৈরি করা হবে। পাশাপাশি আফিয়ার পুরো শিক্ষাজীবনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তারেক রহমান নিজেই। অমিত বলেন, “আফিয়া জেনেটিক ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত—এটি লাখে একজনের হয়। অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের কারণে পরিবার ও সমাজ যে নির্মম আচরণ করেছে তা খুবই দুঃখজনক। কিন্তু আমাদের নেতা তারেক রহমান মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। আমরা সবসময়ই আফিয়ার পাশে থাকব। তারেক রহমানের এই উদ্যোগে আশার আলো ফিরে এসেছে মনিরা খাতুনের চোখে। তিনি অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে বলেন—অনেকদিন পর মনে হলো, আমার সন্তানকে কেউ আপন বলতে চেয়েছে।
প্রধান সম্পাদকঃ মোঃশামছুল আলম, প্রকাশকঃ রবিউল হোসেন রিপন, ০১৬৩৯২২৫২০৫, সম্পাদকঃ পম্পি বড়ুয়া
Copyright © 2025 দৈনিক রাঙামাটি সময়. All rights reserved.