
প্রেস বিজ্ঞপ্তি,
আমি মোছাঃ তাজমিনা আক্তার, স্বামী-মোঃ হেলাল উদ্দিন, গ্রাম-শালুকগাড়ী, থানা-গাবতলী, জেলা-বগুড়া। বিগত ইং ২৮/০৭/২০১৩ তারিখে নুরানী মোড়, বগুড়া আই.ভি ক্লিনিকে ২টি জমজ সন্তান প্রসব করি। আই.ভি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের সহায়তায় আমার ছেলে সন্তানকে চুরি করা হয় এবং সন্তানটি গাবতলী থানার, ঈশ্বরপুর গ্রামে আনোয়ার হোসেন এর কাছে বিক্রি করা হয়। পরে সে চুরিকৃত সন্তানের খোঁজ পাই নেপালতলী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে। তারপর আমি গ্রাম পুলিশ দিয়ে শালিস এর ব্যবস্থা করি। সেখানে আমি আপোষ মীমাংসার চেষ্টা করি, এবং সেখানেও ব্যর্থ হই। তারপর আমি নেপালতলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ দেই। তারপর চেয়ারম্যান সাহেব আপোষ মীমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হয়। তারপর চেয়ারম্যান সাহেবের সহযোগীতায় বগুড়া জজ কোর্ট নারী শিশু ট্রাইবুনাল ২তে ২০১৯ সালে মামলা করি মামলা নং-৫৬১৯। সেখানেও আমি মীমাংসার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরে কোর্ট থেকে ডি.এন.এর আদেশ দেয়। তারপর ডি.এন.এর নামে বগুড়া জেলা কারাগারে ২৫/০৩/২০১৯ তারিখে আমাকে কাস্টরিতে নেয়। সেখান থেকে ২৭/০৩/২০১৯ সালে আমাকে ঢাকা কাশিমপুর কারাগারে চালান দেওয়া হয়। সেখানে ৭ দিন রাখার পর আমার ডি.এন.এ সম্পূর্ণ করানো হয়। তারপর আমাকে আবার কাশিমপুর কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরে সেখানেও ২ দিন রাখা হয়। পরে সেখান থেকে আবার বগুড়া কারাগারে পাঠানো হয়। তারপর বগুড়া কারাগারে ১ দিন রাখা হয় এবং ১ দিন পর আমি জামিনে মুক্তি হই। ৩ মাস পর আমার ডি.এন.এ রিপোর্ট আসে পজিটিভ। তারপর কোর্ট পক্ষ ডি.এন.এ টি গোপনে জালিয়াতি করে, জালিয়াতি রিপোর্ট আমাকে দেয় এবং নথিতে যুক্ত করে। তারপর রিপোর্ট সম্পর্কে আমার বগুড়ার আইনজীবী কোর্টে নারাজি দিয়ে পুনরায় ডি.এন.এর জন্য ২০,০০০/-(বিশ হাজার) টাকা জমা দেয়। তারপর থেকে ডি.এন.এর জন্য বিচারক শুধু খালি আদেশ দিয়ে থাকেন। কিন্তু ডি.এন.এ করানো হয় না। তারপর ০৯/০১/২০২২ তারিখে আবারো ডি.এন.এর নামে বগুড়া জেলা কারাগারে কাস্টরিতে নেওয়া হয়। পরে ১০/০১/২০২২ তারিখে ঢাকা ডি.এন.এ অফিসে পাঠানো হয়। অফিস কর্তৃপক্ষ জানায় আমার ডি.এন.এর রিপোর্ট ১ম টাই পজিটিভ এবং বলা হয় ডি.এন.এ অফিস বন্ধ। তারপর ঢাকা ডি.এন.এ অফিস থেকে আবারো বগুড়া কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরে ১১/০১/২০২২ তারিখে জামিনে মুক্তি পাই। পরে আমি পজিটিভ রিপোর্ট এবং বাচ্চা নেওয়ার পিটিশন দেই। আমাকে বাচ্চা না দিয়ে পিটিশন এবং রিপোর্টসহ ফেরত দেওয়া হয়। তারপর আমি জাবেদা নেওয়ার জন্য পিটিশন দেই। কিন্তু আমাকে কোর্ট থেকে বিচারকের নির্দেশে জাবেদা দেওয়া হয় নি।
নিরুপায় হয়ে আমি আমার আইনজীবীর ডায়েরি থেকে আদেশের তারিখগুলি নিয়ে কম্পিউটার থেকে কম্পোজ করে নিয়ে ঢাকা হাইকোর্টে এনেক্স-১৩ কোর্টে রিট মামলা করি। রিট মামলার শুনানী ১২/১২/২০২২ তারিখে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আহসানুল করিম ও অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন। তারপর ১৪/১২/২০২২ তারিখে মামলার নথি নিয়ে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ২ এর বিচারকের হাজিরার তারিখ হয়। বিচারক সাহেব নথিতে নেগেটিভ রিপোর্ট দায়ের করে। পরে আমার হাইকোর্টের আইনজীবীরা ডি.এন.এ অফিস থেকে পজিটিভ রিপোর্ট সংগ্রহ করে। ইং ১৫/১২/২০২২ তারিখে রিট মামলার শুনানী হয়। তারপর ০২/০১/২০২৩ তারিখে আদেশের তারিখ হয়। সেই তারিখ আমার ঢাকা হাইকোর্টের আইনজীবী আমার কাছে গোপন রাখে। তারপর ২৮/১২/২০২২ তারিখে রাত ৯.০০ ঘটিকার সময় আমার বগুড়া এ্যাডভোকেট রনি নিজ বাসায় ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। তারপর ১১.৩০ মিনিট পর্যন্ত অনেক ভয় ভীতি দেখায় এবং অকথ্য ভাষায় কথা বলে। আমার বগুড়া জজ কোর্টের আইনজীবীকে ফোনে হুমকি দেয়। আমাকে না জানিয়ে ঢাকা হাইকোর্টের আইনজীবীরা এনেক্স ১৩ কোর্টের-১৫২৬৫ নাম্বার রিট মামলাটি প্রত্যাহার করে নেয়। পরে ঐ দিনই ফোনে জানায় আপনার মামলাটি বিচারক খারিজ করে দিয়েছে। আমি তখন নিরুপায় হয়ে বলি আমার খারিজের আদেশটি
পাঠাইয়া দেন। কিন্তু তখন আমাকে বলে আদেশের কপি ৩ মাস পরে পাবেন। আমি ২০ দিন পর বগুড়ার জজ কোর্টে খোঁজ নেই এবং আমাকে বলে আদেশের কপি আসে নাই। তখন আমি ঢাকা হাইকোর্টে যাই, যাওয়ার পর আদেশের কপিটা উঠাই। উঠানোর পরে জানতে পারি মামলাটি খারিজ হয় নাই। কিন্তু রিট মামলাটি আমার ঢাকা হাইকোর্টের আইনজীবীরা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। এ বিষয়ে বগুড়া নারী শিশু, ট্রাইব্যুনাল-২ কোর্টের পি.পি মোঃ আশিকুর রহমান সুজন, নারী শিশু ট্রাইব্যুনাল-২ এর সকল কর্মচারী এবং আই.ভি ক্লিনিকের কর্তৃপক্ষের সবাই জড়িত। এই মামলায় সর্বমোট ৬টি জালিয়াতি করা হয়েছে। (১) আল্ট্রাসনো, (২) প্রেস্ক্রিপশন, (৩) ডাবল স্ট্যাম্প, (৪) ডি.এন.এ, (৫) নথি থেকে অনেক পজিটিভ কাগজ, (৬) রিট মামলা না জানিয়ে প্রত্যাহার করা।
এই মামলার ৬টি জালিয়াতি করে আসামী জামিনে ঘোরে আর আমি বাদী কাস্টরিতে থাকি। এত হয়রানির পরেও বাচ্চা ফিরে না পাওয়ায় ৩১/১০/২৪ ই তারিখ এ বগুড়া জেলা পরিষদের সামনে থেকে আমার চুরিকৃত ছেলে সন্তানটি আমি আসামীর কাছ থেকে বাসায় নিয়ে আসি। আমার বাসায় ১ সপ্তাহ থাকার পর আসামী পক্ষের দালাল মোঃ মতিয়ার রহমান, মোঃ বাবলু, মোঃ রফিক ও ডাঃ আমিনুল ইসলাম, মোঃ আমজাদ হোসেন লুদু এদের সহযোগিতায় বগুড়া সদর থানার ওসি মোঃ মইনউদ্দিন এর নির্দেশে আমাকে এবং চুরিকৃত সন্তানকে পুরুষ এসআই মোঃ রাজিব হোসেন, মোঃ শহিদুল এর দ্বারা গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। আমাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর সদর থানার ওসি জিজ্ঞাসা না করে মামলা সম্পর্কে না বুঝে আমার চুরিকৃত সন্তানটি আসামীর হাতে উঠিয়ে দেয় এবং আমাকে অন্য রুমে বন্ধ করে রেখে শরীরের বোরখা, হিজাব, ওড়না, সব খুলে নেয় এবং আমাকে সারা রাত খালি ফ্লোরে রাখে। পরের দিন ০৭/১১/২০২৪ তারিখে বেলা ১১.০০ ঘটিকায় ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে চালান দেয়। কোর্টে হাজির হওয়ার পার ম্যাজিসস্ট্রেট আমাকে কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দেয়। বগুড়া কারাগারে ১৫ দিন থাকার পর বগুড়া জেলা দায়রা জজ আদালতে ১৩/১১/২০২৪ তারিখে বগুড়া জেলা দায়রা জজ আদালতে মিস কেস করি এবং শুনানির তারিখ ২০/১১/২০২৪ তারিখে বগুড়া জেলা দায়রা জজ মোঃ শাহজাহান কবির ডি,এন, এ পজেটিভ রিপোর্ট দেখার পর জামিন দেয় এবং তিনি আমার পক্ষে আদেশ দেন এবং আমার আর একটি ষ্ট্র্যাম্পের মামলায় আসামীর প্রতি সমন তিন বছর পর, মামলা নং-৫৮১ এবং আমার ছেলের বয়স এখন বার বছর চলে। শুধু তাই নয় আসামীদের বিচারের মুখোমুখি করতেও ঠিক বার বছর সময় লেগে গেল। আমার সন্তান চুরীর সাথে যে সমস্ত ব্যক্তিরা জড়িত, আমি চাই তাদের উপযুক্ত বিচার হোক তারা যেন জামিন না পায় ভবিষ্যতে আর কোন মায়ের বুক থেকে কেউ যেন সন্তান চুরি করার সাহস না পায়, তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে আমার এই মানববন্ধন।
পরিশেষে প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টার ও দেশবাসি তথা সাংবাদিক ভাইসহ সকলের কাছে আমার আকুল আবেদন সবার সহযোগীতায় আমি যেন আমার চুরিকৃত সন্তানকে ফিরে পেয়ে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি তথা বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
বাদীর আইনজীবি নিবেদক বাদীঃ
মোঃ রবিউল ইসলাম মোছা: তাজমিনা আক্তার
০১৭২৩-২১৪১৫৪ ০১৭৪৩-৭৬৩০১৮